বোরহানউদ্দিনের কাদিরাবাদ গ্রামের ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ
অনেকেই দেখতে আসেন। ছবি তোলেন । দিক মাপেন। আশ্বাস দেন ।শুনি নতুন ব্রিজ হইব। কয়েকদিন পর আর কোন খোঁজ থাকে না। উপস্থিত সংবাদকর্মীদের দেখে এমনই মন্তব্য করেছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা ইউনিয়নে ৫ নং ওয়ার্ডের আমির উদ্দিন হাজির হাট জামে মসজিদের পাশে বড় পাতা গ্রামে ব্রিজটি অবস্থান। পার্শবর্তী লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়েনের কাজিরাবাদ গ্রাম।দু উপজেলার দুটি গ্রাম কে সংযোগ করছে ওই ব্রিজটি। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার মানুষের যাতায়াত। ব্রিজটির কোনো মেরামত বা পূর্ণসংস্কার না হওয়ায় ঢালাই খসে পরে বেড়িয়ে গেছে রড। মরিচা পড়ার কারণে উপরে দেয়া দুই পাশের লোহার এ্যাঙ্গেল খুবই জরাজীর্ণ। বিপদে আছে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ৷
ব্রিজটি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান আহম্মেদের ছেলে কালিমুল্লাহ (৪৮) বলেন, ১৯৯১ সালে এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। পরর্তীতে আর কোনো মেরামত না হওয়ায় গত ১০ বছর পূর্বে ব্রিজটি ভাঙ্গা শুরু হয়। যা আজ এ অবস্থায় পৌছায়।
রত্তন দর্জির ছেলে আকবর হোসেন (৫০) বলেন, বেশ কয়েকদিন পূর্বে আমার মেঝো ছেলে নাছির এখানে পরে গিয়ে আহত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সে হাটতে পারেনি।
মজম বাজার ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্র নজরুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির সময় ব্রিজটি পারাপারে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। গত কোরবানির ঈদের তিনদিন আগে আমাদেরে এক প্রতিবেশী এখান দিয়ে মজম বাজারে বিক্রির জন্য গরু নিয়ে ব্রিজটি পার হওয়ার সময় গরুটি ব্রিজের ভাঙ্গা জায়গায় পরে যায়। পরে আমি সহ কয়েক জন মিলে গরুটি উদ্ধার করি। পা ভেঙ্গে যাওয়াতে সেটি আর বিক্রি করা যায়নি। শুধু তাই নয় অনেক পথচারী ও শিক্ষার্থীরা এখানে পরে গিয়ে দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
পার্শবর্তী মসজিদের ইমাম শাহে আলম জানান, একমাস আগে বোরহানউদ্দিন থেকে আসা ৩ যাত্রীসহ একটি মোটরসাইকেল ব্রিজের ফাঁকা স্থান দিয়ে খালে পরে যায়। আমি সহ স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে প্রেরণ করি। বাড়ীর পাশে মসজিদ থাকা সত্যেও ব্রিজটি পার হওয়ার ভয়ে অনেকেই মসজিদে আসেনা।
এছাড়া স্থানীয়দের আরো অনেকে জানান, ব্রিজটি খারাপ থাকায় এখানে কোন যানবাহন আসে না। কোন ব্যক্তি অসুস্থ হলে তাকে ঘাড়ে করে রাস্তায় উঠাতে হয়। এ অবস্থায় আমরা বাঁশ দিয়ে ঝুকিঁ নিয়ে চলাফেরা করছি। এখানে প্রতিনিয়তই অনাকাক্ষিত ঘটনা ঘটছে। ছোট ছোট বাচ্ছারা ব্রিজটি পার হয়ে স্কুল মাদ্রাসায় যেতে ভয় পায়। ব্রিজটি যাতে এখানে পূর্ণনির্মান করা হয় আমরা এর জোড় দাবি জানাচ্ছি।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন বিনিউজকে জানান, আমি নিজেও ব্রিজটি দিয়ে আসা যাওয়া করি। এখানকার এলাকার মানুষদের দুঃখ দূর্দশার কথা আমি বেশ করেই জানি। ব্রিজটি মেরামত করানোর জন্য আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু তাতে কোন কাজে আসেনি।
জানতে চাইলে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজজ্জামান বাবুল মুফোফোনে বিনিউজকে জানান, আমি চিকিৎসার জন্য এখন ঢাকার মোহাম্মদপুর একটি হাসপাতালে আছি। আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই।