অস্বাভাবিক জোয়ারে পানিবন্ধি বোরহানউদ্দিনের ১০ হাজার মানুষ। হুমকির মুখে বেড়িবাঁধ।

শিশির ভট্টাচার্যঃ

অমাবস্যার তিথির প্রভাব,উজান থেকে নেমে আসা ঢল,ভারী বর্ষণ আর প্রবল বাতাষের কারণে গত কয়েকদিন যাবত উত্তাল হয়ে উঠছে মেঘনা।অস্বাভাবিক জোঁয়ারে বেড়িবাঁধের বাইরে অবস্থানকারী ৪ ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। হুমকির মুখে আলিমুদ্দিন বাজার থেকে শেল্টার বাজার পর্যন্ত শহর রক্ষা বেড়ী বাঁধ। একদিকে করোনা পরিস্থিতি অন্যদিকে জোয়ার-ভাটার দোলাচলে কাটছে তাদের অস্বাভাবিক জীবন।
শুক্রবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বেড়িবাধেঁর বাইরের ঘরগুলো পানিবন্ধি হয়ে রয়েছে। কথা হয় মেঘনার উপকূলবর্তী পানিবন্ধি মানুষগুলোর সাথে।আলিমুদ্দিন বাজারের আব্দুল বারেক,বাবুল,মোস্তফা বলেন,জোয়ার আসার আগে ঘরছাড়ি,ভাটা হলে ঘরে আসি।রান্না- বান্নার অভাবে অনেক বেলা উপোস থাকতে হয়। রাতে জোঁয়ার আসলে বেড়িবাঁধের ভিতরে বসবাসকারীদের বাড়িতে রাত কাটাই। এখানে বসবাসকারি ২৪টি পরিবারের দিন কাটছে এইভাবে। বড় মানিকা ৬ নং ওয়ার্ডের শেল্টার বাজারের নিকটবর্তী এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন মহিলা – পুরুষ বেড়িবাঁধের উপর বসে আছেন।কথা হয় রতন,ফাতেমা,নুরজাহান,ও রোসোনা বেগমের সাথে।হাত উচু করে পূর্বদিকে কয়েকটি পানিবন্ধি ঘর দেখিয়ে বলেন,ওইগুলোই আমাদের বাসা। ভাটা লাগার অপেক্ষায় আছি। দুপুরের খাবার এখনও জোটেনি।ভাটা হলে ঘরে ফিরে রান্না করে খাবেন।একই অবস্থা জনালেন,কামাল মাঝি,জাকির,রহিজল,মারফ,হেলাল,ইউনুছ ও জাহাঙ্গীরর্। আলিমুদ্দিন বাজার শেল্টার বাজার পর্য়ন্ত ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাধ স্থানীয়রা মেরামত করেন।

ভাটা আসার অপেক্ষায় বেড়িঁবাধে মানুষ

বড় মানিকা ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান,তার ওয়ার্ডে ৮২ পরিবার বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাস করেন।
বড় মানিকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার বলেন,তার ইউনিয়নের ৫,৬,৮ নং ওয়ার্ড পানিবন্ধি।বিশেষ করে বেড়ীবাধের বাইরে বসবাসকারীদের অবস্থা খুবই করন।তিনি জরুরী ভিক্তিতে এ সমস্ত মানুষের জন্য সহায়তার দাবি করেন।

পক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ার নাগর হাওলাদার জানান,৬ নং ওয়ার্ডের একাংশের মানুষ পানিবন্ধি আছেন। টবগী ইউনিয়নের ছলেমান মেম্বার জানান,তার ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডটি বেড়িবাঁধের বাইরে।হাসাননগর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের একই অবস্থা। এ দুই ওয়ার্ডে প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্ধি জীবন যাপন করছেন। হাকিমুদ্দিন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন জানান,ওই বাজারে প্রায় ৩ শত দোকান রয়েছে। কয়েকদিন যাবত তারা জোয়ার ভাটার দোলাচলে আছেন।জোয়ারের সময় ৩/৪ ফুট পানি উঠে তাদের মালামাল ভিজে যায়।এতে তারা অর্ধকোটি টাকার মতো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বলে তিনি দাবী করেন। এছাড়াও অতিরিক্ত জোয়ারের কারণে ঢাকা,চরফ্যাশন ও বেতুয়াগামী লঞ্চযাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে। পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন বানভাসি মানুষ। চরম দুর্ভোগ পড়েছেন মানুষগুলো।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুর রহমান জানান,বিষয়টি ভোলার মান্যবর জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। দ্রত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ূ