সূর্যমুখীতে স্বপ্ন বুনছেন ওরা

মনিরুজ্জামান,
ভোলার বোরহানউদ্দিনে জনপ্র্রিয় হয়ে উঠছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। এ কাজে আর্থিকভাবে লাভবান ও সফল হওয়ার স্বপ্নে বিভোর অনেকে। একজনের দেখাদেখি আরেকজন চাষ করছে।যার কারনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সূর্যমুখী চাষ।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার কুতুবা ইউনিয়নের লক্ষীপুর,মানিকা ইউনিয়নের বড় মানিকা,ছোট মানিকা গ্রাম,দেউলা ও গংগাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন ব্লকে ৪৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়। যদিও লক্ষ্যমাত্র ছিল ১৫ হেক্টর। এখানকার কৃষকরা হাইসান-৩৩ ও হাইব্রিড রবি জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগ আরও জানায়, হেক্টর প্রতি ফলন ১.৬-১.৮ টন। প্রতি কেজি সূর্যমুখী ফুল থেকে শতকরা ৪২-৪৪ ভাগ তৈল হয়।
সরজমিনে কুতুবা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পন্ডিত বাড়ির রাস্তার পাশে সূর্যমুখীর ফুলবাগানে গিয়ে অপরুপ নয়াভিরাম দৃশ্য দেখা যায়। সবুজের মাঝে হলুদের সমারোহ। ফুলে ফুলে উড়ছে মৌমাছি । কথা হয় চাষি মো: শাহজাহানের সাথে। তিনি জানান,”২০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেন। প্রথমে বীজের সংকটে পরেন। পরে জেলা সদর থেকে সংগ্রহ করেন।মূলত সখ থেকে এ কাজ। গাছে ফুল ধরেছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার লোকজন ফুল দেখতে ভিড় করছেন। খরচ হয়েছে মাত্র ৭ হাজার টাকা।
লক্ষীপুর গ্রামের সূর্যমুখী ফুল চাষি অহিদ সর্দার জানান, “ এ বছর ৩২ শতাংশ জমিতে হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। উপকরণ কৃষি বিভাগ দিয়েছে। ৫ মন ফলনের আশাবাদ করেন।প্রতি মনে ২০কেজি তেল পাওয়া যায়।যার বাজার মূল্য নূন্যতম ৩৫০ টাকা। প্রতিটি গাছে ফুল ধরেছে। সূর্যমুখী চাষে এবার সফলতা ও লাভের আশা করছেন তিনি”।
বড় মানিকা ইউনিয়নের দক্ষিণ বাটামারা গ্রামে নুর হোসেন জানান,তিনি ৩৩ শতাঙশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। ফলন ভালো। চাষি কালূ মিয়া,মালেক,মোতাহার জানান,কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার দিয়েছে। বাগানে ফুল আসার পর প্রতিদিনই লোকজন আসছে । বিকাল বেলা মোটরসাইকেল দিয়ে পুরুষ-মহিলা এসে ফটো তুলেন।তারা বলেন, সূর্যমুখী চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়া সহজ।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: ওমর ফারুক জানান,তেল ফসলের ঘাটতি দূরীকরণে এবং তেল আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্য সূর্যমুখী চাষের কোন বিকল্প নাই।এটা খুব লাভজনক বিধায় আগামীতে আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হবে।