ভারতীয় সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক কে ব্যবহার করে বিএনপির নয়া কৌশল

:  ড. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যানকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সরকারের সমালোচনাসহ দেশবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়াটা স্বাভাবিক পর্যায় হিসেবে যখন পরিগণিত হচ্ছে, তখন নতুন ছক নিয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি-জামায়াত চক্র। নয়া কৌশল হিসেবে ভারতের সাবেক বিবিসি প্রতিনিধি সুবীর ভৌমিককে দিয়ে সরকার বিরোধী প্রপাগান্ডা চালিয়ে
যাচ্ছে।

আর প্রপাগান্ডার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর মধ্যকার কিছু আজগবী গল্প একে। এ ধরণের গল্প শুরু হয়েছে
প্রধানমন্ত্রীকে এসএসএফ সদস্য দ্বারা হত্যা পরিকল্পনার বানোয়াট গল্প
দিয়ে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরণের সংবাদের বিরুদ্ধে তখন তীব্র
প্রতিবাদও করা হয়েছিল। এইবার প্রপাগান্ডার অস্ত্র হিসেবে কেন ব্যবহার করা হচ্ছে সেনাবাহিনীকে?

সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যাক-বিএনপির রাজনীতি মানেই সেনাবাহিনীর
বলয়ে আর্শীবাদপুষ্ট একটি দল। যে দলের ভবিষ্যৎ রাজনীতি সুদূর পরাহত এক
মরীচিকা। জনগণের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন একটি দল যারা সব সময়ে সেনাবাহিনীর
উপর ভর করতে চায়। কোন নির্বাচনে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে
থাকবে কি থাকবেনা এটা গণতান্ত্রিক একটি চর্চা। কিন্তু বিএনপি সব
সময়েই দাবি করে থাকে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি দিতে হবে।

সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি দিলেই মনে হয় বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। এই
করোনাকালেও এইড টু সিভিল প্রশাসন হিসেবে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া
হলে তারা তার সমালোচনা করেন। বিএনপি কেন যেন, গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর
আস্থা রাখতে পারেননা। অর্থাৎ অরাজক একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ঘোলা
পানিতে মাছ শিকার করার পায়তারা সব সময়ে থাকে বিএনপির। বাংলাদেশ
সেনাবাহিনী বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম দক্ষ ও পেশাদার সুশৃঙ্খল একটি বাহিনী। এ
বাহিনীর নামে আজগুবি গল্প তৈরি করে ফায়দা তোলার আর সুযোগ আছে বলে মনে
হয়না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে সরিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল
শফিকুর রহমানকে পরবর্তী সেনাপ্রধানের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে- এমন আজগবি ও
বানোয়াট গল্প নিয়ে আবারও হাজির হচ্ছেন একদা বিবিসির সাবেক ভারতীয়
সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক। সুবীর ভৌামিকের নামে গত ১০ জুন ২০২০ খ্রিঃ এমন সংবাদটি প্রচার করা হয়। ভৌামিকের করা গত ১৪ জুন ২০২০ খ্রিঃ আরেকটি সংবাদ প্রচার।

দুটি লেখাতেই তিনি জেনারেল আজিজ আহমেদের বিপক্ষে ষড়যন্ত্র বিষয়ে উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যকার ষড়যন্ত্র তথ্যে কার লাভ? এই
মুহূর্তে মোটা দাগে বলতে গেলে বিএনপির চাওয়াটা আন্তর্জাতিক
মিডিয়ায় তুলে ধরছে সুবীর ভৌমিক। আর সুবীর ভৌমিক যে ভাষায় এবং যে
সুরে সংবাদ প্রচার করছেন, সেই একই তথ্যগুলো সোশ্যাল মিডিয়া প্রচার করছে
বিএনপি’র নেতা- কর্মীরা। বর্তমান সিজিএস লেফটেন্যান্ট জেনারেল শফিকুর
রহমান পরবর্তী সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পাচ্ছেন।  এমন তথ্য প্রচার
করছে তারা। কমেন্টে অভিনন্দনও জানাচ্ছেন তারা। সুকৌশলে একটি বাহিনীর
সর্বোচ্চ পর্যায়ে গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করছে তারা। অর্থাৎ
ইকুয়েশনটা খুব সহজে মিলে যাচ্ছে। আর এ কাজে সুবীর ভৌমিককে মনগড়া
তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে বিএনপি সমর্থিত কয়েকজন সাবেক সেনা
কর্মকর্তা।

তারেক রহমানের ঘনিষ্ট শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ দেশের বাইরে বসে বাংলাদেশ ও সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য  লখো অনলাইন ও সামাজকি যোগাযোগ মাধ্যমে
লখিছনে তনি। অনুসন্ধানে জানা গছে, শখে মহউিদ্দনি আহমদে
যবরশযহবং পড়স নামে একটি অনলাইন নউিজ র্পোটাল চালান। তনিি বাংলাদেশে
দনৈকি শক্তি পত্রকিায় কছিুদনি সাংবাদকিতা করনে এবং লবিারলে র্পাটি পরচিালনা
করনে। এসময় জাতীয় প্রসে ক্লাবে নয়িমতি যাতায়াত করতনে। বএিনপপিন্থী সাংবাদকি
নতো শওকত মাহমুদ ও জামায়াতপন্থী সাংবাদকি নতো রুহুল আমনি গাজীসহ বএিনপি
জামাতরে সাংবাদকিদরে সাথে যোগাযোগ ছলিো।
বিএনপি তথা চারদলীয় জোটের পতনের পর ২০০৭ সালে শখে মহউিদ্দনি আহমদে
লন্ডনে গয়িে বাংলাদশে ও সরকার বরিোধী ষড়যন্ত্র করা শুরু করনে। সভা, সমেনিার,
ফসেবুকে ও অনলাইন নউিজ র্পোটালে বাংলাদশে, সরকার ও আওয়ামীলীগরে বরিুদ্ধে
নানা মথ্যিা কথা বলনে এবং লখিনে। এ কারনে তনিি লন্ডনে রাজনতৈকি আশ্রয় চয়েে
নাগরকিত্ব পানন।লন্ডনে গয়িে তারকে জয়িার সাথে তনিি সাক্ষাৎ করনে। সরকার ও
আওয়ামী লীগ বরিোধী ষড়যন্ত্র করে তারকে জয়িার আস্থা র্অজন করনে। তারকে
জয়িার সাথে ভালো সর্ম্পক হয়ে গলেে তনিি তারকে জয়িার কথামতো, বাংলাদশে ও
সরকার এবং আওয়ামী লীগরে বরিুদ্ধে জোরালোভাবে ষড়যন্ত্রে নামনে। লন্ডনে বসে
তনিি ঝযবশযহবংি.পড়স অনলাইন নউিজ র্পোটাল খুলে আওয়ামী লীগ, সরকার ও
সনোবাহনিীকে জড়য়িে মথ্যিা বানোয়াট লখো লখিনে। লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয় না
পেয়ে পরে তনিি আয়ারল্যান্ড গয়িে রাজনতৈকি আশ্রয় নয়িে নাগরকিত্ব পান। তারকে

জয়িার কথামতো তনিি আয়ারল্যান্ডে বসে সামাজকি যোগাযোগ মাধ্যম ফসেবুকে এবং
অনলাইনরে মাধ্যমে বাংলাদশে সরকার ও সেনাবাহিনীর বরিুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালয়িে
যাচ্ছনে বলে সূত্র জানায়। সুবীর ভৌমিক যে সুরে যে তথ্য প্রকাশ করছেন সেই
একই তথ্য প্রচারে নেমেছেন শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ।

ফ্ল্যাশব্যাকে যাওয়া যাক- ২০১৬ সালে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদিও সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। আর সেই বৈঠকটিও করা হয় ভারতে। বিবিসিসহ প্রায় সকল গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রচার পায়। পরে আসলাম চৌধুরীকে ঢাকায় গ্রেফতার করা হলে তিনি তা স্বীকার করেন। ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ মিয়ানমারের সংবাদ মাধ্যম মিজ্জিমা তে সুবীর ভৌমিক প্রকাশ করলেন- বিপথগামী এসএসএফ’র ৬/৭ জন সদস্য দ্বারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র। দেশের সবচেয়ে প্রশিক্ষিত বাহিনীর বিপক্ষে এমন
মনগড়া গল্পকে নাকচ করে কড়া স্টেটমেন্ট দেয় সরকার। অর্থাৎ এ ধরণের বানোয়াট
গল্প তৈরি করে সরকার ও প্রশিক্ষিত বাহিনীর মধ্যে দূরুত্ব তৈরির পায়তারা করছে
সুবীর ভৌমিক।

২০১৮ সালের জুনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ
চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং তারেক রহমানের উপদেষ্টা ও
দলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির ভারতের মন গলাতে গোপনে সেদেশ সফর
করেন। সফরে তারা ক্ষমতাশীল বিজেপিসহ কিছু রাজনৈতিক -অর্থনৈতিক
বিশ্লেষকের সংগে দেখা করেন বলে তখন বিবিসি সহ ভারতীয় গণমাধ্যম খবর
প্রচার করে। বিএনপি আন্তর্জাতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির দ্য হিন্দুকে দেয়া
এক মন্তব্য এ বলেন, বিএনপি আমলগুলোতে ভারত ও বাংলাদেশের খারাপ সম্পর্ককে ভুল নীতি হিসেবে আখ্যা দেন। একটি রাজনৈতিক দল আরেকটি দেশের সরকার তথা বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে সফর করতেই পারেন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিগুলো চীন – রাশিয়া ভ্রমণ করছেন রাজনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য। কিন্তু প্রশ্নটা উঠে যখন সফরটা গোপনে হয়। তাই এটা প্রমানিত হয় যে, লন্ডনে পলাতক থাকা তারেক রহমানের নির্দেশে কিছু ব্যক্তির সঙ্গে তারা আঁতাত করতেই তারা সেখানে যান।

সেই আঁতাতের ফসল সুবীর ভৌমিক। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করা বিএনপি-জামায়াতের নতুন কোন কৌশল নয়; ৩০ জানুয়ারি ২০১৩ আমেরিকান পত্রিকা  বরং শিরোনামে আর্টিক্যাল লিখে আমেরিকাকে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিকে দেয়া জিএসপি সুবিধা বাতিলের দাবি জানায় বিএনপি সভানেত্রী স্বয়ং খালেদা জিয়া। বেগম খালেদা জিয়ার মুখে যখন দেশপ্রেমের কথা বলেন, তখন জাতির কাছে তা প্রহসন ছাড়া আর কিছু মনে হয়না। ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করতে দেশের বিরুদ্ধে যেতেও তাদের বেগ পেতে হয়না।

একটি গণতান্ত্রিক সরকারের সঙ্গে সেনাপ্রধানের দূরুত্ব হলে তিনি অবশ্যই
টিকতে পারেননা। তাই এটা বলা বাহুল্য যে, জেনারেল আজিজ সরকারের আস্থার
প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। করোনা কালে
একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী সাধারণ মানুষের পাশে দাড়িয়ে করোনা মোকাবিলায়
কাজ করছে, যা সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
সৃষ্টি হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্যে অর্থাৎ সরাসরি রণক্ষেত্রের মধ্যে সৃষ্টি
হওয়া একটি বাহিনী। যারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে
একটি মানচিত্রের জন্ম দিয়েছে। সেই প্রশিক্ষিত বাহিনী বর্তমানে
জাতিসংঘের শন্তি মিশনে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে শান্তি স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের
লাল সবুজের পতাকা সমুন্নত করছেন।

মিয়ানমারের সংবাদ মাধ্যম মিজ্জিমা গ্রুপের  পের কনসাল্টিং এডিটর সুবীর
ভৌমিক আপনি আপনার দেশ ও মিয়ানমার নিয়ে চিন্তা করূন। গুজব আবার
সাংবাদিকতা এক হলো কবে? তাই আপনাকে আর বিবিসির সাবেক সাংবাদিক
হিসেবে পরিচয় দেয়া সমীচীন হবেনা। আপনার পরিচয় আপনি এখন একজন গুজব
রচয়িতা! আপনি জেনে থাকবেন গুজব প্রতিরোধে বাংলাদেশ যথেষ্ট সফল।

লেখকঃ এম,এ সালাম শান্ত
সম্পাদক,দৈনিক নতুন সন্ধানে।