জোঁয়ার আসলে ডুবে যায় রাস্তা, সাকোঁই ভরসা

জোঁয়ার আসলে ডুবে যায় রাস্তা, সাকোঁই ভরসা

জেএম.মমিন, (বোরহানউদ্দিন):
জোঁয়ারের পানি উঠলেই ডুবে যায় রাস্তা ৷ বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন কিংবা পথ চলাচল ৷ এতে ঘর বন্ধি হয়ে পরে ওই এলাকার প্রায় ২০০টি পরিবার ৷
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডস্থ দরুন গ্রামের মিয়াজী বাড়ীর জামে মসজিদের সামনে থেকে দক্ষিন-পশ্চিম দিকে বেড়ীবাঁধ পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা যেন দেখার কেউ নেই। মাঝে মাঝে ভাঙ্গন ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে ৷ এবং জোয়ারের পানিতে রাস্তাটির বেশির ভাগ অংশই খালের মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে ৷ এতে গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে যাওয়াই দূষ্কর ৷ ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ওই এলাকার পথচারী, রোগী, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ৷ ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে চড়ম দুর্ভোগ ।
স্থানীয়রা জানায়, বিগত ১০ বছরের মধ্যে রাস্তাটির কোন সংস্কার করা হয়নি । ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাটির এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার মানুষ যাতায়াত করে । একটু বৃষ্টি হলে বা জোয়ারের পানি উঠলেই রাস্তাটি সম্পূর্ণ তলিয়ে যায় ৷ এমন অবস্থায় কয়েকদিন আগে এলাকাবাসীরা মিলে রাস্তার উপরে বাঁশ, সুপারী ও খেজুর গাছ দিয়ে সাঁকো তৈরি করেন ৷ এখন এটাই চলাচলের এক মাত্র ভরসা ৷
স্থানীয় বাসিন্দা আমানুল্লাহ মিয়াজী জানান, অনেক বছর ধরে আমরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছি৷ কেউ অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিতে নৌকা ছাড়া কোন উপায় থাকে না ৷ রাস্তাটি সংস্কারের জন্য অনেকের কাছে গিয়েও আমরা কোনো সুফল পাইনি ৷
কুলছুম বিবি (৬০) জানান, আমরা বৃদ্ধা মানুষ রাস্তা খারাপ থাকায় কোনো কাজে ঘর থেকে বের হতে পারিনা ৷
মোজাম্মেল হক চৌধুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র ইলিয়াছ জানায়, রাস্তা খারাপ থাকায় বর্ষার সময় জোয়ারের পানি উঠলে আমরা ঠিকমত ক্লাসে যেতে পারি না ৷ এছাড়া স্কুল ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থী সাথী, তানিশা, সুমন, মারুফ সহ অনেকে জানায়, রাস্তা খারাপ থাকায় অনেকবার বই খাতা নিয়ে পানির মধ্যে পরে গেছি ৷ যার কারনে স্কুলে ক্লাশ করতে পারনি ৷ তাই পড়া লেখায় ব্যাঘাত ঘটছে ৷
ওই এলাকার বাসিন্দা জসিম, রিয়াজ, রফিজল, মাদ্রাসা শিক্ষক আল-আমিন ও মিয়াজী বাড়ী জামে মসজিদের ইমাম আঃ কাদের সহ আরো অনেকে জানান, রাস্তা না থাকায় এখানকার মানুষ চরম বিপদে আছে ৷ জোয়ার উঠলে বাজার করতে কেউ হাট বাজারে যেতে পারেন না ৷ সন্তানরা ঠিক মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না ৷ এবং মসজিদে নামাজ আদায় করতে যাওয়া যায় না ৷ তারা আরো জানায়, রাস্তাটি খারাপ থাকায় ২০১৭ সালে স্কুলে যাওয়ার সময় একই এলাকার বসু খার ছেলে অন্তর (১০) জোয়ারের পানিতে ডুবে মারা যায় ৷
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মহিবুল্লাহ মৃধা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার কারণে এলাকার মানুষ যাতায়াতে কষ্ট পাচ্ছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আশাকরি জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার গাইন বলেন, রাস্তার সমস্যার বিষয়ে এলাকাবাসী আমাদের অফিসে লিখিত আকারে প্রেরণ করলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ৷
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান জানান, রাস্তাটি পরিদর্শন করে যত দ্রুত সম্ভব আমরা রাস্তাটি মেরামতের উদ্যোগ গ্রহন নিবো যাতে এলাকাবাসী নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে ৷