মনিরুজ্জামান:
ভোলার বোরহানউদ্দিনে তরমুজ গাছের পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা ।কেউ ঘরে বসে নেই। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাড়-ভাঙ্গা খাটুনিতে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন ফসলের ।পুরুষের পাশাপাশি পরিবারের নারী ও শিশুরা ক্ষেতে নেমে পড়ছে।একটু ফুসরত নেই তাদের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত বছর ১৬০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে । এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ১৭০ হেক্টর । গত বছর ফলন ও বাজার দর ভালো পাওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চারগুনের বেশি ৭০০ হেক্টর অর্জিত হয়েছে । যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৩০ হেক্টর বেশি । আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার ৩৫ হাজার মেক্ট্রিকটন ফলন আসবে বলে আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ ।
তেঁতুলিয়া নদীর বুকে জেগে ওঠা চর , চরগ্রীস,চরলতিফ,চর শরীফাবাদ,রায়শ্যাম, পাতার চর,রামকানাই সহ বিভিন্ন চরে প্রান্ত জুড়েঁ তরমুজ আর তরমুজের চাষাবাদ। ওই চরের বৃহত চাষী ও জনপ্রতিনিধি তাজুল শাহাবুদ্দিন বলেন,এ বছর তিনি ৬০ একর জমিতে ড্রাগন জাতের তরমুজ আবাদ করছেন।তিনি বলেন,চরে এবার ৪৫০ একর জমিতে তরমুজ চাষাবাদ হয়েছে।গত বছর তিনি ৯০ লাখ টাকা আয় করছেন বলে জানান। চলতি বছর তরমুজের ভালো ফলনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সিকদার চরের তরমুজ চাষী সুমন হাওলাদার বলেন,গত বছর তিনি ৩০ একর আর চলতি বছর ৪৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করছেন। তিনি বলেন, প্রতি একরে খরচ হয় লাখ টাকা।উৎপাদিত তরমুজ বিক্রয় করে পাওয়া যায় ৩ লাখ টাকা।তিনি জানান,স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার তরমুজ যাচ্ছে রাজধানী টাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের দরুনবাজার গ্রামের চাষি সিহাব মৃধা জানান,এবছর ২০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি । এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন ও দ্বিগুন লাভের আশা করছি ৷
বাথান বাড়ীর গ্রামের চাষি রিয়াজ মীর জানান, ১৬ একর জমিতে বিট ফ্যামিলি, গ্রেড ওয়ান ও ড্রাগন জাতের তরমুজ চাষ করেছি । ইতিমধ্যে গাছে ফুল ও ফল আসতে শুর করেছে ।
একই গ্রামের চাষি ফিরোজ সিকদার, আবু মূসা বিশ্বাস ও গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ইউছুফ হোসেন জানান, গত বছর চাষ করে ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এবছর আরো বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করেছি ।
উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ আলম,নাছির খাঁন,মিজানুর রহমান রনি বলেন,উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কয়েকগুন তরমুজ বেশি চাষ হয়েছে।এদের মধ্যে ড্রাগন ও ড্রাগন সুপার জাত বেশি।অধিক ফলনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসার এইচ এম শামীম জানান, এবছর ১৭০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল । তরমুজ আবাদ হয়েছে ৭০০ হেক্টর । এখানকার মাটি তরমুজ চাষের উপযোগী । তাই অল্প সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় অনেকে তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন ৷
তিনি আরো জানান, কৃষি উপকরণ দিয়ে ২০০ হেক্টর জমিতে প্রদর্শনী করা হয়েছে । সকল চাষিকে কৃষি উপকরণ দিয়ে সহযোগীতা করতে না পারলে ও মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে