ঘূর্ণিঝড় মোখা:উপকূলজুড়ে আতঙ্ক,চলছে মাইকিং

মনিরুজ্জামান,

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। ভোলা জেলা ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে বলে জানান আবহাওয়া অফিস। ঘুর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ১৬০ টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ে
চরের নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মেঘনার পাড়ের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানান ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল।এসময় তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।

দুর্যোগপ্রবণ দ্বীপজেলা ভোলাব বোরহানউদ্দিনে ঘূর্ণিঝড় সতর্কতায় সকাল থেকে থেকে মাঠে নেমেছে সিপিপির স্বেচ্ছাসেবীরা। নিকটবর্তী সাইক্লোন সেন্টার আশ্রয় নেওয়ার জন্য পৌর মেয়র রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে চলছে মাইকিং।
শনিবার (১৩ মে) সকাল থেকে মেঘনা- তেতুঁলিয়ার উপকূলীয় ইউনিয়ন সহ গোটা উপজেলায় মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান করার অনুরোধ করেন তারা।

এদিকে ৮ নং মহা বিপদ সংকেত শুনে উপকূলের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে।


শনিবার সকাল থেকে বোরহানউদ্দিনের অভ্যন্তরীণ ও দূর পাল্লার রুটের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান মেঘনার ঘাটের দায়িত্বশীল উজ্জ্বল হাওলাদার।
এদিকে উপকূলের বাসিন্দারা বলছেন, ঝড়ে তারা নিজেদের রক্ষা করলেও বসত ঘর, ফসলি জমি, গবাদি পশু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তারা কিছুতেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে বোরহানউদ্দিন সিপিপির টিম লিডার মো. শাহজাহান মোল্লা বলেন,১ হাজার ২৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। শুক্রবার থেকে বেড়িবাধের বাইরে বসবাসকারীদের নিকটবর্তী আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য মাইকিং চলছে। রাতে কিছু লোক আসলেও শনিবার সকালে চলে যায়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: সোহেল হোসেন বলেন,১৬০ টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।জেলা প্রশাসন থেকে ২০ হাজার টাকা ও ৫ মে: টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে।ইতিমধ্যে মেঘনার তীরবর্তী টবগী, হাসান নগর,বড় মানিকা ও তেঁতুলিয়ার তীরবর্তী গংগাপুর ইউনিয়নে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার প্রেরণ করা হয়েছে করা হয়েছে।
এদিকে শনিবার সকালে বোরহানউদ্দিন উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম,নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক, প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহেল হোসেন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ৫টি ইউনিয়ন ও প্রস্তুতকৃত সাইক্লোন সেন্টার গুলো পরিদর্শন করেন।
নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক বলেন,ইতিমধ্যে একটি কন্টোলরুম(০২৪৭৮৮৯৫৫৮৩) খোলা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ১০০ প্যাকেট করে শুকনো খাবার পৌছে দেওয়া হয়েছে।প্রতিটি ইউনিয়নে ১টি করে মেডিকেল টিম ও গবাদি পশুর জন্য টিম ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট পৌছে দেওয়া হয়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ফায়ার সার্ভিসকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। এককথায় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে।