৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হচ্ছে গড়ে ৫২,স্যালাইনের তীব্র সংকট

মনিরুজ্জামান, :
ভোলার বোরহানউদ্দিনে ডায়রিয়ার রোগি বাড়ছেই। আবহাওয়ার পরিবর্তন,পুঁকুরের পানি ব্যবহার,অসচেতনতার কারণে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এমন দাবি ডাক্তারদের। এখানে গত ৭ দিনে প্রায় ৩৬৩ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। দিনে ১ শত ডায়রিয়ার রোগির ভর্তির কথা্ও জানালেন স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ।হাসপাতালের ফ্লোরে বিছানা বিছিয়ে রোগিদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার( ১৫এপ্রিল) সকাল থেকে হাসপাতালের ডায়রিয়ার স্যালাইন সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না স্যালাইন। এ সুযোগে হাসপাতালের সামনে গোটা দুয়েক ফা্র্মেসির মালিক ১ হাজার মিলিলিটার স্যালাইন ৪-৫শত টাকায় বিক্রয় করছেন এমন অভিযোগ ভুক্তভূগীদের।
বোরহানউদ্দিন হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১০ এপ্রিল ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩২ জন, ১১ এপ্রিল ৫০ জন , ১২ এপ্রিল ৬১, ১৩ এপ্রিল ৫২, ১৪ এপ্রিল ৫৩ ,১৫ এপ্রিল ৬৩ ,১৭ এপ্রিল ৫১ জন ভর্তি হয়েছেন । আবাসিক মেডিকেল অফিসার জানান মাঝখানে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ জন রোগি ছিল।
শনিবার সকালে স্থানীয় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগি আর রোগি ।বেড খালি না থাকায় ফ্লোরে,রুমের বাইরে মেঝতে বিছনা বিছিয়ে রোগিদের চিকিৎসা দিচ্ছেন ডাক্তার আর নার্স।পুরুষ,মহিলা,শিশু ওয়ার্ড রোগি পরিপূর্ন। ৫০ হাসপাতালে বেড সঙ্কটে রোগীদের বারান্দা ও ফ্লোরে চিকিৎসা সেবা নিতে দেখা গেছে । ৫০ শয্যা বেডের জনবল দিয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কাচিয়া ইউনিয়নের ফুল কাচিয়া গ্রামের মিনজু বেগম ,আলাউদ্দিনের মেয়ে সিমু,বোরহানগঞ্জ গ্যাসফিল্ড রোডের ফরজানা,রানু জানান,হাসপাতালে স্যালাইন নেই।বাইরে ও পাওয়া যাচ্ছে না।বেশি দাম দিলে পাওয়া যায়। কাচিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সিরাজ বিশ্বাস ও শাহজাহান জানান,১ হাজার মি:লি স্যালাইন ৪-৫ শত টাকায় বিক্রয় করেনে। পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়,হাসপাতালের বারান্দায় বিছানা বিছিয়ে স্যালাইন নিচ্ছেন পক্ষিয়া ইউনিয়নের বাদশা হাওলাদের স্ত্রী বিবি ফাতেমা। দায়িত্বরত কয়েকজন নার্স (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, গত ১০-১২ দিনে ডায়রিয়া রোগীদের চাপে আমরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।
বোরহানউদ্দিন পৌরবাজারের ঔষধ বিক্রেতা সেবা মেডেকেলের আকবর হোসেন মানিক,সৈয়দ মেডিকেলের রুবেল,এ রহমান মেডিকেলের মঞ্জু,আরজু মেডিকেলের আজম বাকলাই ঔষধ কোম্পানীগুলো ডায়রিয়ার স্যালাইন সরবরাহ করতে পারছেন না।
একটি মেডিকেল কোম্পানীর প্রতিনিধি জানান,স্যালাইনের চাহিদা খুব অল্প সময়ের।অনেকটা মৌসুমি পোডাক্ট।সরকার প্রতিটি কোম্পানীর কাছ থেকে ঔষধ কেনার কারনে হঠাৎ সরবরাহের ঘাটতি হয়েছে।
ডাক্তার মশিউর রহমান সাদী বলেন,আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। এরকম পরিস্থিতিতে মায়েরা বাচ্চাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন। খাবার পানি ফুটিয়ে ও রান্নাবান্নার পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএম্ও) সাজ্জাদ হোসেন বিষয়টি মৌসুমি ডায়রিয়া উল্রেখ করে সকলকে সচেতন হওয়ার আহবান জানান।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাক্তার তপতি চৌধুরী বলেন, ৫০ শয্যা বেডের হাসপাতাল,। ডায়রিয়া দিনে ১০০ রোগি ও ভর্তি হয়েছে। বেশি রোগি হওয়ার কারনে বারান্দায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্যালাইন সংকটের বিষয়টি উধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শীঘ্রই স্যালাইন পাওয়া যাবে।
ছবি সংযুক্ত,হাসপাতালের বেড খালি না থাকায় রোগীরা ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।